# ১
দুষ্প্রাপ্য দুঃখদিনে
একলা নিজের প্রহর থাকলে স্পর্শ থাকতে হয়
মনের গহীন কোণে সে এক স্বপ্ন থাকতে হয়
স্বপ্নডানায় উদাস আদিম হাওয়া বইতে হয়
সেই হাওয়াতে মনের দুখে—
কে কথা কয়?
কে কথা কয়?
একটা প্রহর কবিতাময় সন্ধ্যা হতে হয়
কষ্টকে সব বুকের পাশে বইতে দিতে হয়
চেনা হাওয়ার কান্না মনে একলা শুনতে হয়
সেই হাওয়াটির কান্না মুছে—
কে কথা কয়?
কে কথা কয়?
এই নিজেকে খুব নীরবে একলা যখন লাগে
মনের সকল ভুল জ্যামিতি মুছে অনুরাগে
সন্ধ্যা আঁকায় নীরবরেখা হৃদয় পুরোভাগে
সেই হৃদয়ের আড়াল কোণে—
কে কথা কয়?
কে কথা কয়?
# ২
মন্ত্রণা
মায়া এবং মাছির মতো হঠাৎ আকুতি ঠুকে গ্যালো চাঁদ।
ওপাশে জনালায় দাঁড়ানো একটা আস্ত রাত
বাতাসের স্কেচ ভুলে আঁকলো জরাগ্রস্ত স্বভাবের পার্শ্বচিত্র।
রূপ দেখা হবেনা জেনেও রূপকথায় যাচ্ছো মধ্যরাতে
মধ্যবর্তী রাতের গালগল্পে তামাক পোড়াচ্ছো
শ্মশানের মরা পোড়ানোর ধোঁয়ায় ওসব একাকার।
দূরে-শাঁখা ভাঙে মৌবতী মাসি। অষ্টাদশী সে।
হঠাৎ ছিটকে দেখি শূন্যতা ঢেকেছে পুরো চশমা
কাছাকাছি কেউ নেই কোথাও।বাতাসে পোড়া শরীরের গন্ধ,
বেপরোয়া স্বভাবে আগুন জ্বলছে
দুঃসময় কখনো ছোঁয়নি মাতাল জীবন
মায়া এবং মৃতদেহের মতো দৃশ্য রুয়ে গ্যালো কুলীন আকাশ।
# ৩
পায়রাস্নাত
চৌকাঠে পড়েছে রোদের মায়াকণ্ঠী গীত
সুর জানে কী এই পথ, জল কিংবা নিশ্চিত পরাজয়ের যুদ্ধরীতি?
ভুলোমনা বাউলের ভাবনা ছিলো এই —
কাহিনিতে হঠাৎ রঙ লেগে গেল।
কোন আড়ালে মিশেছে তারা দুই পথ?
সামন্তবাদের দাবাচাল শেষে শূন্য খেয়াল গেয়ে ওঠো।
চিনেছো কী প্রণয়ের আড়ালে ফেলে আসা গাঢ় চুম্বন ছিলো কার?
ঘ্রাণের ওপারে মিশে গেছে প্রাণান্ত হাহাকার কখনো।
অমরাবতীর দুঃখ মেনেই পড়েছো জবাফুলের রাত্তি-কথা
মরণের চিহ্ন ডেকে নিয়েছে সদ্য-স্বতন্ত্র কিছুটা শাদাটে বোধ
নৃশংসতা হেঁটেছে স্পর্শের নদী-নীল-অরণ্যে চুপচাপ
মুখোশে আয়নায় এইবেলা কেউ দিয়েছে দেখা।
চিনেছো কী তাঁর মুখ? মায়াক্রান্ত বুকের পায়রাস্নাত সুখ?
# ৪
জ্যোৎস্নাসংক্রান্তি
মরা কটালের জ্যোৎস্না মুছে গেলে
থাকুক পড়ে একলা প্রাচীন ভূমি
আলো-জলের কোরাস ডানা মেলে
যাচ্ছে কোথাও এই প্রকৃতির মমি
কেবল মাতাও গন্ধ গোলক খেলা
মায়ের ছায়ায় আকুল ব্যাকুল ধূসর ছেলেবেলা
কেবল শোকাও রাত্রি – নদীর ঘ্রাণ
হৃদয় পোড়া আদিম মাতাল আনন্দ সুপ্রাণ।
ওগো আমার হাওররঙা ঢেউ
ঘুমের ঘোরে যাচ্ছে ডেকে কেউ
আহা! আমার রক্ত পোড়া দেশ
অন্ধ -কালে পুড়ছো দেখি বেশ