বালকবীরের বেশে
১.
বারবার বলেছি, আপনি বালক!
বারবার আপনি নিজেকে পুরুষ
প্রমাণ করতে চেয়েছেন
অতএব, তৈরি করা হল দুর্গ এবং
যুদ্ধক্ষেত্র
বালক এলেন রণসজ্জায়
আবারও মিনতি করে বললেম,
‘আপনি নেহাতই বালক, আমার
হৃদয়ের ভার নিতে আপনি অক্ষম!
’বালক রণডঙ্কা বাজালেন
২.
যুদ্ধক্ষেত্র প্রস্তুত
আপনি আমি যুদ্ধে নেমেছি
আমার হাতে সংসার নিঙড়ানো
মায়া
আপনার হৃদয়ে ধারালো অস্ত্র!
৩.
বলুন, এমন যুদ্ধ তো আমি চাইনি,
আমি যা চেয়েছি সেটা হৃদয়ঙ্গম
করার মতো হৃদয় আপনার
এখনও জন্ম হয়নি।
আমি তো অপেক্ষা করতেই
চেয়েছিলাম,
আমি তো উড়িয়ে দিতে
চেয়েছিলাম দুজনের ভেতরের
সবটুকু ব্যবধান!
আপনি অনড়
তারচেয়ে বেশি অনড় আপনার
বালক-স্বভাব!
আমি তার নীচে পিষ্ট হতে
থাকলাম
৪.
আপনার আমার যুদ্ধের দিন ধার্য
হয়েছে
আপনি পরপর নির্ভুল নিশানায়
তীর ছুঁড়ছেন আমার দিকে,
আমি অকস্মাৎ বালকের ভেতরে
বীর দেখতে পেলাম,
আমার হাতের সবকটা অস্ত্র মুহূর্তে
ফেলে দিলাম মাটিতে
৫.
বারবার বলেছিলাম, ‘হৃদয় স্পর্শ
করতে পারেন আপনি?’
আপনি বালকোচিত আবেগে
সম্মতি জানিয়েছিলেন।
অথচ দেখুন, আপনার একটিমাত্র
সম্মতিতে আমি প্রবল বিশ্বাসে
আমার ভেতরের সব কটা দরজা
এক এক করে খুলে দিয়ে বসে আছি,
আর আপনি সেই সুযোগে আমার
ঘর থেকে পালিয়ে গেলেন!
৬.
বালক, হৃদয় স্পর্শ করতে পারা
অতো সহজ নয়!
বীররসে জারিত আপনার
বাইরেটা জানে : যে কোনো ফুল
অনায়াসেই স্পর্শ করা যায়,
অথচ, এটা জানে না : কোনো
কোনো ফুল নিজে থেকে না
চাইলে তাকে ছোঁয়ার সাধ্য স্বয়ং
ঈশ্বরেরও নেই!
আর দেখুন, আপনি সেই ফুল হাতে পেয়ে কী অনায়াসে তাকে পায়ের নীচে নিমেষে পিষে ফেললেন…
আপনি অবুঝ বালক, যুদ্ধ আপনার প্রিয় ক্রীড়া। আমি লাজুক, দুঃখিনী বাংলা অক্ষর!
অপ্রাপ্তবয়সী আপনার সাথে,
আমার হৃদয়ের কারসাজি সত্যিই বড় বেমানান ঠেকলো আজ।