পেশায় শিক্ষক। Indian Periodical এবং Muse ইংরেজী পত্রিকায় ইংরেজী কবিতা, গল্প ও প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
এ-ছাড়া বাংলা ভাষার বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রধানতঃ কবিতা, অন্যান্য রচনাও প্রকাশিত হয়েছে। কবিতা ও প্রবন্ধ লিখতেই বেশি পছন্দ করেন। সাহিত্য ছাড়াও ভাষাতত্ত্ব অন্যতম প্রিয় বিষয়।
এই সেই বনাশ্রয়, গিরিধাপ
দারুবৃক্ষের সুগন্ধি বনাঞ্চলে দৃশ্যমান পাহাড়ের ধাপে তুষার কণা বাসনার মতো পড়ে থাকে, নির্ঝরণী পাশে। গন্ধ-স্নেহ নীরবতা আরও গভীর তোমার মৃগনাভি খোঁজে, বাকল খসিয়ে আমার নিঃশ্বাস কিছু স্বরধ্বনি প্রান্তিক ছায়া ছায়া আলিঙ্গন রেখে কবেকার চিরহরিৎ দেবতরু পাশে আড়াল থেকে যায়। গুল্ম জড়ানো এই শিলালেখ মনে পড়ে? আমাদের পাথর ঘষা চকমকি, বরফ ঝরা তোমার স্তনের বোঁটা, আমাদের সন্তান? এই সেই বনাশ্রয়, গিরি ধাপ, বৃক্ষ মায়া। বাতাসের কানে কানে কারা যেন ঈর্ষা রেখে গেছে শুধু। কী হবে বর্ণমালা মনে রেখে যদি মেরু ধুয়ে যায় আগামী বিকেলে? এসো, হাত ধরো। পূর্বপুরুষের অসহায় তুষারজীবন বৃক্ষ সাক্ষী, তুলে রাখি, আর একবার তোমার নাভিমূলে, এইখানে নিম্ন ধাপে।
কলাইয়ের থালা
কিছুটা বেলা বাড়তেই স্নান সেরে নেয়, পাণ্ডুলিপির পাতা জড়ো করে কিছুটা অসংলগ্ন প্রলাপ বকে বাপুজি কেক কেনার পয়সা গুনতে গুনতে চেনা চায়ের গুমটিতে ঢুকে পড়ে। ধোঁয়া ধুলোর কেটলির মুখে বাষ্পীয় সংলাপ, কাঁচের কাপে বিগত দশ হাজার চুমুক, প্রাচীন অহংকার। ছোকরা ফ্লাইওভার কোথা থেকে হঠাৎ এসে বুক ফুলিয়ে বি টি রোড ধরে। ছেঁড়া সাইড ব্যাগে অভ্যেসগুলো ওৎ পেতে থাকে আজও, কলম একটা আছে বটে, আধ মরা। সেদিনের আলো আকাশের এক্কা দোক্কা রাস্তার ধারে বাড়িটা আজ বড্ড বিপদজ্জনক। দীননাথ কাঁধ থেকে তবু সাইড ব্যাগটা নামালো না, কলাইয়ের থালার বয়স একাত্তর পেরোলো, শুকুরালি ফেলে গেছে পুরোনো কালভার্ট। অনেকটা মেঘ নেমে এলে দীননাথ পাজামার রশি টেনে ধরে মাঝে মাঝে, পানি হাটি গঙ্গা পেড়িয়ে গুঁজে দিয়ে আসে দু একটা কবিতা কে জানে কার পকেটে! শিবানী চলে গেছে এই তো সেদিন বোবা মোবাইল ফেলে। অনেকটা জেদী রোদ, পায়ে পায়ে তেষ্টা শ্রাবণে আগুন, পথ ও লাশ মাড়িয়ে মনে পড়ে বৃষ্টি ও বাতাস সম্মান এনেছিলো একদিন।
দীননাথ কেশে কেশে তখনও সতীশ, বুধ, আনারের কাছে বিড়ি চেয়ে আবেগের উত্তাপ মেপেছিলো। কোথাও কিছু পচনের গন্ধ পেয়েছিলো কি? সরে সরে গেলো সব, নিজস্ব বুদ বুদ।
আর মাত্র চৈত্র টুকু বাকি, আষাঢ় সকালে দীননাথ বিলুপ্ত প্রজাতি। আলপথ, মাটি নিষ্ফলা থেকে গেলো। কাছেই শ্মশান। দীননাথ হেরে গেলো। ফুটপাত জুড়ে আজ মধ্যবিত্ত চাতুরী। কারা যেন আপসরফা সেরে টি টোয়েন্টি মজা লুটে নেয়। বাকিরা পরিযায়ী হয়ে উড়ে যায় কোথায় কে জানে!