Email: info@kokshopoth.com
October 13, 2025
Kokshopoth

প্রদীপ কুমার নাথ-এর অনুবাদ কবিতা

Jun 20, 2025

প্রদীপ কুমার নাথ-এর অনুবাদ কবিতা

পেশায় শিক্ষক। Indian Periodical এবং Muse ইংরেজী পত্রিকায় ইংরেজী কবিতা, গল্প ও প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। 

এ-ছাড়া বাংলা ভাষার বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রধানতঃ কবিতা, অন্যান্য রচনাও প্রকাশিত হয়েছে। কবিতা ও প্রবন্ধ লিখতেই বেশি পছন্দ করেন। সাহিত্য ছাড়াও ভাষাতত্ত্ব অন্যতম প্রিয় বিষয়।

# ১

অস্তিত্ব 

অ্যাড্রিন সু

 

আমার পেট ভরে গিয়েছিলো।

ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি এলে

অভ্যাস পাথর কেটে ফেলে,

বই কিনে মস্তিষ্ক ভরিয়ে নিলাম তাই।

জুঁই ফুলের গন্ধ নেই, 

দু মুঠো ভাত খেতে দেয় না বই,

তোমার শরীর, অভিমানী, ঘুমিয়ে পড়ে।

আমি বই পড়ি,

আমার ফাঁকা জায়গায়

ওরা জঞ্জাল ফেলে যাবে কেন?

আমি পেট আর শরীর ভরিয়ে তুলবো?

একটা কনসার্ট, একটা সিনেমা 

অথবা একটা খেলা

মস্তিষ্কের শিরা ছিঁড়ে ফেলবে?

আমাকে ভুলিয়ে দেবে? 

প্রতিটি অক্ষরে নৃতত্ত্ব, ইতিহাস,

মানুষের তিন লক্ষ বছরের যাত্রা।

শাক অন্ন খেয়ে আমি তৃপ্ত,

যারা বই পড়ে না তারা মৃত।

গতকাল তুমি কী করেছিলে

সেটাও বুঝতে পারো না।

 

মূল কবিতা: ‘সলিটিউড’ (Solitude)

 

কবি পরিচিতি: 

অ্যাড্রিন সু (Adrienne Su) একজন উদীয়মান আমেরিকান কবি ও লেখিকা। তাঁর বিখ্যাত কবিতার বই, ‘লিভিং কোয়াটার্স।’ তাঁর সাম্প্রতিক প্রবন্ধ সংকলন, ‘হট, সোর, সল্টি, সুইট।’ তিনি ডিকিনসন কলেজে শিক্ষকতা করেন। পেনসিলভেনিয়ার কার্লাইজেল শহরতলিতে থাকেন। 

 

# ২

যখন তুমি বেছে নিতে বলো

হেমা এন 

 

জোয়ারের অহংকার 

মুহূর্তে মিলিয়ে যায় আবেগের সমুদ্রে।

মুদ্রার নীতিমালা পড়েছো কখনো? 

আঙুলের ফাঁক গলে আবেগ চুঁইয়ে পড়ে

কখনও কখনও।

ভিখারীর অপছন্দ চাঁদ ও সূর্যের

মাঝামাঝি,

গোলাপ ছিঁড়ে আনে যারা

বোধের কাঁটায় নীতি কিছু জেগে থাকে?

লুস্তিতিয়া লিসার জন্ম দেয়,

অথবা আলজে।

আমি নিজেকে ঠকাতে পারি না

যখন তুমি বেছে নিতে বলো

নীতি কিংবা আবেগ।

শীতের কেক, গ্রীষ্মের পানীয় 

রাতের জ্যোৎস্না, দিনের রোদ – 

যে বীজ পুঁতেছো, কী ভাবে এড়াবে 

তার ফল!

সাদা আর কালো, প্রতিবিম্ব ছায়া,

আয়না সব দেখে।

ঈশ্বর কি আজও বেঁচে আছে?

আমাদের স্বাস বায়ু, জন্ম মৃত্যু

ভয়হীন উলংগ সত্যের মুখোমুখি

গুটিয়ে থাকা আত্মাও জেগে ওঠে

বোধের সংবিধান হাতে।

আমাকে প্রশ্ন করো না

নীতি নাকি আবেগ, কোনটা বড়?

প্রজ্ঞার উচ্চতা মাপো যদি

জীবন কখনও 2+2 নয়।

 

মূল কবিতা: একটি প্রশ্ন – অসমাপ্ত ( A Question -U(n)finished

 

কবি পরিচিতি:

“আমি সকল পেশায় দক্ষ নই, অনেকেরই মাস্টার” এই উক্তির রূপক হলেন হেমা নমশিবায়। তিনি দক্ষিণ ভারতীয় উদীয়মান লেখিকা। আইটি হাব বেঙ্গালুরুর কাজ ছেড়ে তিনি এখন কলেজের সহকারী অধ্যাপক। চলচ্চিত্রের সাবটাইটেল এবং বেশ কয়েকটি সংকলনের সহ-লেখিকা। 

 

# ৩

তবুও জাদুকরী কায়েদা সরিয়ে রাখি

ডমিনিক আহকোঙ 

 

তুমি বেহালা বাজাও?

আমি দুষ্টুমি কাছে টেনে রাখি।

রাস্তার মানুষের কিছু প্রতিধ্বনি 

ঘিরে থাকে যখন

স্যান্ডউইচ আর মারমাইট কামড়ে

একটা ছেঁড়া পাতা সরিয়ে রাখি।

মার্জিন ঘেঁষে অদৃশ্য কালিতে কিছু লিখি।

আমি জানতাম না

নিরক্ষীয় বাতাসে সাদা কালি অদৃশ্য হয়,

পূবের মানুষেরা কোনোমতে 

খাবার জোগাড় করে।

গল্প শুরু হতেই দুষ্টু জাদুকরী মারা যায়।

অনেক চেষ্টা করেও

তার মুখ দেখা যায় না।

তবুও, তার জাদুকরী কায়দা

আমার লাল ভেলকো স্নিকার্সে 

লেগে যায়।

আমি টোকা দিয়ে সরিয়ে দিতে থাকি।

বুঝি, এটা জাদু নয়, অনুশীলন।

লাল খেজুর, দানা শস্য আমার শেকড়।

শরীর ঢাকা চংসামে ঢলে পড়ছে বিশ্বাস,

লজ্জাবনত।

এই গল্পে কোনো পাঞ্চকিন নেই,

বাবা মায়ের মুখে

কোনো এক লণ্ডভণ্ড ঝড়ের কথা শুনি।

তুমি কেন বোঝো না

আমার বাবা-মায়ের চীন ভাষায়

প্রশান্তির কত আবেগ জড়ানো!

কেন আমাদের আংলাইজড হতে হবে? 

তারা কারা, যারা আমার মস্তিষ্কে

লুকিয়ে আছে? শৈশবের ভাষা।

আমার মাতামহ মারা যাবার আগে

বিউলির ডাল আর বাসমতি চালের ভাত

খেতে চেয়েছিলো।

 

মূল কবিতা: উইচ অব দ্যা ইস্ট (Witch of the East)

 

কবি পরিচিতি:

ডমিনিক আহকোঙ অপেশাদার সৃষ্টিশীল লেখিকা। তিনি হাক্কা-মরিশিয় বংশোদ্ভূত। তাঁর জন্ম ইংল্যান্ডে। তবে বেড়ে ওঠা সিঙ্গাপুরে। এখন নর্থ সেন্ট্রাল আরিজনায়

থাকেন। বর্তমানে তিনি ‘সোহ’ কবিতা জার্নালের সহ সম্পাদিকা।