# ১
নিরন্ন বিষাদ
তোমার যে লেখাটুকু ভুলে যেতে চাই বার বার
শিশুকাল প্রিয় ফুল, ফুলের মতন প্রিয় দিন
কোনোখানে ফেলে গেছ ঋতুকাল অমলিন স্নেহ
সেসবই রেখেছি কাছে, সে জোরেই আমি গৃহহীন।
তোমাকে চেয়েছি যত ভীষণ রোদ্দুর জামা গায়ে
তোমার কানের কাছে একটি তারায় সুর বেঁধে
তুমিও ছেড়েছ ঘর যতিহীন অজেয় স্বভাবে
নিঃশ্বাসে মিশেছে প্রীতি, এ যাবৎ নিরন্ন বিষাদে।
# ২
অদৃষ্ট
কী জোরালো আন্তরিক ডাকে শুরু হল পারাপার,
সাবধানে দুয়েকটি পায়ে বিদেশী ফুলের ঘ্রাণে
চেনা চেনা দোকানের পাশে হেঁটে যাই প্রায়শই
দিকচক্রবালে লাগে নীলাভ সোহাগ আরামের।
দিনমান উচাটন পাখি, দ্যাখে কোনো গাঁয়ের ভিতরে
রক্তকরবীর সাজে থোকা থোকা সন্ধে নামে ঘরে,
রমণী পেতেছে হাত, বিপদ ভীষণ ইহকালে
করজোড়ে ডেকে যায়, ঈশ্বর সহায় এই জ্বরে!
বিপন্নতা তিলে তিলে পাঁজরের মাংস খেয়ে ফেলে
খুলে যায় অস্থি মজ্জা, হৃৎপিণ্ড খোলা থাকে একা
আমার বিপদ বুঝে তোমারও ফেরার তাড়া জাগে
কী প্রসঙ্গে কাটাকুটি, মুছে যায় প্রিয় যত রেখা!
# ৩
মর্জিতে
কালও তোমাকে দেখেছি, তুমি জানতে পারোনি বোধহয়,
বাড়ির পাশের রাস্তা ধরে হেঁটে যাচ্ছ নিভু নিভু
অচেনা আলোর ছায়া, কী ভীষণ অকাতরে চেয়ে
আমার জানলার কাচে, অবিকল ভঙ্গী, সহজাত!
মুঠো মুঠো শেফালীর ঢেউ লুটিয়ে পড়েছে পায়ে,
আঁচল ছড়িয়ে দেব আমি, ভেবেছি বলেই বুঝি
তুমি চলে গেছ অবেলায়, চলে গেছ অলিখিত,
আমিও বেঁধেছি সুর, তোমাকে আমার বাহুডোরে।
# ৪
বিরহজনম
আগে তো কখনো পড়িনি এ মন, মনেই পড়েনি এভাবে শপথ,
এভাবেই যদি খোয়া যায় সব পিচের শহর চেনা বাড়িঘর!
আধখানা চাঁদে লেগেছে গ্রহণ, নেমেছে অসুখ, অসুখের ভ্রম।
তোমার কাছেই রেখে যাব আলো, যত কারুকাজ
আমার আঁচলে ধরা পড়েছিল।
তোমার নামেই শিউলি সকাল বেঁধেছিল মন
পোড়া এ শরীরে বিরহজনম!
তোমার ছায়ায় সুখী ছিল চাঁদ, কত হুহু মন,
মনের বারতা জানতে পারোনি–
কত গ্রহপথে,কত অভিমানে ঘুরেফিরে মন তোমার উজানে
তোমার কাছেই ফিরে আসবার ফন্দি ফিকির খোঁজে।