প্রথম বৃষ্টির আদরে বাগানের ভেজা মাটি থেকে ভেসে আসা সোঁদা সোঁদা গন্ধটায় কেমন যেন মিশে থাকে মহুয়ার নেশা। কৃষ্ণচূড়ার রং ধরেছে যে ভ্যাবাচ্যাকা গাছটায়, তার মগডালে বসে একলা পাখি একমনে মেঘ বৃষ্টির খেলা দেখে। টুপটাপ শিলের শিহরণ থেকে বাঁচার জন্যই হয়তো পাতারা একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে, হারানো সুরের খোঁজে। ওই পাতাদের ফাঁক দিয়ে একফালি আকাশ দেখার পর কেমন যেন চিনচিন করে আমার মন, নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসে কোন পূর্বাভাস ছাড়াই!
দিকশূন্যপুরের নিঝুম পুকুরপাড়ে বসে দিকের সন্ধান আর ভাঙা মন্দিরের মধ্যে বাসা বেঁধে থাকা চামচিকেটার সাথে গল্প করতে করতে দিন কেটে যায় আমার। ঐন্দ্রজালিকের গুপ্তমন্ত্র কি লুকিয়ে আছে মারিয়ানা খাতের কোন প্রবাসী ঝিনুকের বুকের রহস্যময় প্রদেশে?
হঠাৎ আকাশের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত পর্যন্ত চিড়ে দিয়ে অট্টহাসি হেসে ওঠে বিদ্যুৎ রাক্ষস, এক মুহূর্তে পরিষ্কার হয়ে যায় মেঘেদের হেঁয়ালি।
সীমার মাঝে অসীমের খোঁজ আর শূন্য আকাশে আকাশকুসুমের রাজপ্রাসাদ বানিয়ে মেঘের মত হালকা হয়ে যাওয়া, এতেই তো জীবনের সার্থকতা।
পাতাদের শরীর থেকে টুপটাপ খসে পড়তে থাকা বৃষ্টির ফোঁটা, গাছের কোটরে বাস করা বিষণ্ণ ভুতুম পেঁচা, দূরের তালগাছটার দিকে চেয়ে চেয়ে দিন কাটানো অভিমানী ঘাসফুল, ওর সাথে ভাব জমাতে এসেও বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়ে ফিরে যাওয়া একলা শালিখ, দুষ্টু কাঠবিড়ালীটা, নিশ্চিন্দিপুরের রেললাইন থেকে স্বপ্নরাজ্যের স্বপ্ন দেখিয়ে হুইসেল বাজিয়ে পালিয়ে যাওয়া ট্রেন—এদের মধ্যেই তো লুকিয়ে আছে জাদু, ভালো থাকার ভালো রাখার সঞ্জীবনী মন্ত্র।
সুইজারল্যান্ডের অহংকারী বরফ বরং রেব্যানের সানগ্লাস পরে ওর মতোই দূরে থাক।
1 Comment
[…] অনিন্দিতা দে […]