শিশ্নশাসন পোক্ত
জামেয়ারে মোড়া প্রায় মুক্ত নগরশরীর
যেন ঠিক পৌঁছে যায় সন্ধিচুক্তিকালে, যবে
নিবন্ত বন্দরময়, লোকচক্ষুর আড়ালে
যতনে অতি সাজান হয় দেবদেবী যত,
যেখানে পাথরকুচি-ফুরুস-রঙ্গন সব
বৃন্তমুক্ত, খুনে বেসামাল বিমূর্ত বর্ষায়
অথবা বেগার্ত, বিষণকামী অগ্রিম গ্রীষ্মে।
জাদুলণ্ঠনের ইশারায় যেন ভেসে ওঠে
পুরাকালের ভাঁজে-ভাঁজে, খানাখন্দে, মন্দিরে
জমে থাকা যত অশ্রুকণা এক লহমায়,
লহরে লহর চুমে যে ছুঁয়ে যায় মাস্তুল,
কাঁপে ভয়াল আগুন, ছড়িয়ে হৃদয়ঘরে
কোথায় যে জ্বলেছে আগুন এমন নির্দয়,
এমন ভ্রমমাণ ভগ্নশ্রী কে দেখেছে আগে !
শিরাল পাতাময় মার্জারশ্মশ্রু যদিও বা
জাগায় শিহরন — অক্ষতই থাকে পাতারং,
শতকোটি কীটের খাদ্যও থাকে শতঞ্জীব —
বিকল হয়না গুল্মপ্রসার, বিফল দেখি
যে সভ্যতা তোর, নিজেরই মাংসে লালা ঝরে
তোর, মানোয়ারি মান্যবর ! — পচিয়ে ফেলিস
প্রবাহ, মূর্ধায় কী তোর শিশ্নশাসন পোক্ত ?
মানচিত্র অনিত্য
বদলে-বদলে বাসা
এঁকেছে বাসিন্দা, মানচিত্র নানা,
মাথার ওপরে আকাশ
পায়ের তলায় মাটি —
এরও বাইরে আরও কিছু
এঁকে চলে বাসিন্দা, মানচিত্র নানা —
বোমারু আলপনায় আঁকা সাদাটে আকাশ দেখে
ফ্যাকাশে বাসিন্দা মুখ লুকোয়
শমিবৃক্ষগহ্বরে, কোনো অসুখ
চিনে রেখে তার মুখ …
কেড়ে নেয় যদি চোখ-দুটো তার
কেটে দেয় যদি হাত-দুটো তার —
সতর্ক হয়েও হল কী কিছু !
হল ক্ষয় সময় অনেক,
জমা হল মানচিত্র পাহাড়প্রমাণ … কিন্তু কোথায় ?
শাখান্তরাল ছেয়ে
জোছনাও যে আজ অন্তর্ঘাতী —
হাত-পা ছড়িয়ে বাস করবে কোথায়
যে আঁকা হবে মানচিত্র নানা ?
বাসিন্দা নিরাশ্রয়, মানচিত্র নানা
নোনা লাগা দেয়ালে-দেয়ালে উজল … আজও
যেমন ছিল কাল,
থাকবে মানচিত্র অনিত্য, এক থেকে অনেক
বাসিন্দার চোখে-মুখে-চোখে
দুখে-সুখে … যূথভ্রষ্ট যাগযজ্ঞে —