হরিণ তার শিং খুলে রেখে
চোখ খুলে রেখে
শেষরাতে একরত্তি প্যান্ডেলের
টিমটিমে ঠাকুর দেখে ভাবছে
এই-ই কি ভগবান,
ইনিই কি সমুদ্রের শাঁড়াসী জলে
পা ধুয়ে দেন,
এনাতেই কি জটিল গরিলা ইকুয়েশনের বুক বাজে?
এমন দৃশ্য দেখতে গ্রাম থেকে শহরে এসেছে হরিণ।
রাস্তায় রোদচশমার শখ তাকে অন্ধ করেছে অর্ধ শতাংশ।
তাতেও সে সুখে আছে।
শান্তিতে আছে। ভয়াবহতা থেকে আড়াল করেছে যেসব গাছ,
তার নিচে সে রেখে এসেছে শিং।
গ্রাম ছাড়ার আগে, জঙ্গল ছাড়ার আগে গুরুজন দাদুহরিণদের পা ছুঁয়ে বলে এসেছে কেমন কেমন স্বপ্ন তাকে ধাওয়া করে ঘুমের সুযোগে উড়িয়ে হেঁচড়ে নিয়ে যায় দূরে দূরে।
দাদুদের গল্প অল্প সল্প মনে আছে।
মাটির ভেতর দূরত্বের ভার কমছে
এই পৃথিবীর বয়স বাড়ার সাথে সাথে.
এই পৃথিবীর পিন্ডি চটকানোর
মটমটানির ঢিমে তালে
অনাহুত বোলতার পাখার হাওয়ায় সংসার সামগ্রী মাটিতে পড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাচ্ছে যেন।
গাছের মূল যেখানে গভীরে
কালো ভেজা মাটিতে মুখ গুঁজে ঘুমায়, সেখানে ফুল ফুটছে।
গাছের মূলে ফুল ফুটছে।
মাটি খোঁড়ার বন্ধু কেবল নেই।
পৃথিবীর সমস্ত গাছের মূলের ফুল ফুটে মাটির তলায় পাতাল পার্বণে জড়ো হয়েছে একসাথে।
সত্যিই মাটির তলায়, দূরত্বের ভার কমেছে বয়সভারে।
কিন্তু এদিকে হরিণ কাগজ কাপপ্লেটে তেলতেলে খাবার খেয়ে
আধো ঘুমে জেরবার।
ওর তো এবার ফিরে যাওয়ার কথা।
দাদুদের গল্প, অল্পসল্প যেটুকু মনে আছে, সেটুকু নিয়ে ঝাড়ফুক খুক খুক শেষরাত স্বপ্ন।
হরিণ তুই ফিরে যা।
এখানে ভগবান নেই,
সমুদ্র নেই, কলকলে কোলবালিশেও কপাল ধোয় না।
ঘুম জমে থাকে ক্লান্ত ভারী কানে।
তোর কান খুলে রাখ চোখ খুলে রাখ কিচ্ছুক্ষণ।
তারপর সংগ্রামের সমস্ত উপকরণ নিয়ে এই অন্ধকারেই রওনা দে।
শেকড় উপশেকড়ের রাস্তায়,
যার মূলে, উলটো উপত্যকায়, ভুল করে কেউ ফুল ফুটিয়েছে।